শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৩

সংবাদ সম্মেলনে- মহাসমাবেশ এর অনুমতি না দেওয়ায় ২৭ ডিসেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভ


মহাসমাবেশ-এর অনুমতি না দেওয়ায় ২৭ ডিসেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভ: ৫ জানুয়ারী প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করুন -সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা মাদানী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, ৫ জানুয়ারী যে একতরফা ও প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এটি বিশ্ববাসীর সামনে দেশকে কলঙ্কিত করবে। এ নির্বাচনে বিনা ভোটেই ১৫৪ জন ইতিমধ্যেই নির্বাচিত হয়ে গেছে, যা নির্বাচনের ইতিহাসে এক নজীরবিহীন ঘটনা। আওয়ামীলীগও বুঝতে পেরেছে
এই নির্বাচন দেশে-বিদেশে কারও কাছেই গ্রহনযোগ্য হবে না। ইতিমধ্যেই সকল বিদেশী সংস্থা এই নির্বাচনে তাদের পর্যবেক্ষক পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অতএব, আমরা আশা করব আওয়ামীলীগ ৫ জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করে দেশকে একটি কলঙ্কের হাত থেকে রক্ষা করবে। তিনি বলেন,
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ এবং নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করে। আমরা সব সময়ই বলে আসছি কোনো দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ দেশে এখনো সৃষ্টি হয়নি। এজন্য আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দাবী করে আসছি। এ দাবী আজ গণ-দাবীতে পরিনত হয়েছে। অথচ ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ এই গণ-দাবীকে উপেক্ষা করে নিজেদের অধীনে এক হাস্যকর ও তামাশার নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। যে নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশে-বিদেশে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঘোষিত ২৭ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ-এর অনুমতি না দেওয়ার প্রতিবাদ এবং ৫ জানুয়ারী প্রহসনের নির্বাচন বন্ধের দাবীতে গত ২৫-১২-১৩  বেলা ১২.৩০ টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সহকারী মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, আবু সাঈদ সিদ্দিকী, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিন, ছাত্রনেতা মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলাম প্রমুখ। তিনি বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতা বন্ধের দাবীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ২৭ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় মহাসমাবেশ ঘোষণা করেছিল। আমরা এক মাসেরও বেশী সময় ধরে মহাসমাবেশের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম। নিয়মতান্ত্রিকভাবে আমরা গত ১৪ নভেম্বর পুলিশ প্রশাসনের কাছে মাঠের অনুমতি এবং মাইক ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আবেদনও করেছিলাম। কিন্তু অত্যন্ত দু:খজনক বাস্তবতা হলো পুলিশ প্রশাসন আমাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি। বারবার যোগাযোগ করার পর তারা আমাদের সমাবেশ করতে দিবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তিনি সরকারের এহেন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এর প্রতিবাদে আগামী ২৭ ডিসেম্বর, শুক্রবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দিবস পালন করার আহবান জানান। সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সরকারী দলের এম.পি-মন্ত্রীদের হলফনামায় প্রদত্ত সম্পদের হিসাব বিবরণী দেখে দেশবাসী হতবাক। আমাদের বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয় মাত্র ৫ বছরে মন্ত্রী-এম.পিদের সম্পদ কি করে শতগুণ, হাজারগুণ বেড়ে গেল। তাহলে এ অবাধ লুটপাট অব্যাহত রাখতেই কি তারা এখন ক্ষমতা হাত ছাড়া করতে চাচ্ছে না? গত নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামীলীগ তাদের নির্বাচনী ইসতিহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছিল। তারা স্পষ্টভাবে আরো বলেছিল, ক্ষমতায় যেতে পারলে আওয়ামীলীগ প্রতি বছর তাদের এম.পি-মন্ত্রীদের সম্পদের হিসাব জণ সম্মূখে প্রকাশ করবে । অথচ ৫ বছর পর আজকে যখন নির্বাচন কমিশনের হলফ নামায় তাদেরই প্রদত্ত সম্পদের হিসাব জনগণের সামনে প্রকাশ পাওয়া শুরু করল তখন তা বন্ধ করতে তারা নির্বাচন কমিশিনকে নির্দেশ দিল। এতে প্রমাণিত হল তাদের প্রদর্শিত সম্পদ সৎ পথে উপার্জিত নয়। তারা ৫ বছরে দেশের এবং জনগণের সম্পদ অবৈধভাবে লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হয়েছে। আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই এসব লুটেরারা দেশ ও জাতির দুশমন। এদেশে রাজনীতি করার তাদের কোনো অধিকার নেই। এসব লুটেরাদেরকে প্রত্যাখান করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আমরা আহবান জানাচ্ছি। আগামীতে কোনো দুর্নীতিবাজ যাতে নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কর্মসূচি : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাতীয় মহাসমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদ এবং ৫ জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচন বাতিলের দাবীতে ২৭ ডিসেম্বর, শুক্রবার দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ দিবস পালন করা হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন